নিজস্ব প্রতিবেদক \
জামালপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের মামলায় সরজমিনে তদন্ত না করে সম্পূর্ণ মিথ্যে প্রতিবেদন দাখিল করায় সদর থানার এসআই শাহিন আলমের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তি দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত এক সাংবাদিক পরিবার। এ ঘটনায় ওই পরিবারটি পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত ৬ এপ্রিল রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও দুনীতি দমন কমিশনে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের সাথে জমি মালিকানার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিজ্ঞ আদালতের রায়ের কপিও সংযুক্ত করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. রাশেদুর রহমান রাসেল স্বাক্ষরিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শাহিন আলম সরজমিনে তদন্ত না করে বাদীরপক্ষে পক্ষাশ্রিত হয়ে আদালতে সম্পূর্ণ মিথ্যা মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, নালিশি জমির প্রকৃত মালিক মৃত হাজী কমর উদ্দিন। তিনি দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. রাশেদুর রহমান রাসেলের দাদা। ওই জমি আপোষ ঘরোয়া বন্টনমূলে পেয়ে ৭৫ বছর ধরে মৃত হাজী কমর উদ্দিন ও তার ওয়ারিশরা ভোগদখল করে আসছেন। বিআরএস জরিপে ভুলক্রমে ১নং কেন্দুয়া ইউনিয়নের মৌজা কুটামনি বিআরএস ৩১৯নং খতিয়ানে বিআরএস ২০৫১নং দাগে আমির উদ্দিনের নামে ভুলবশত ৫০০ হিস্যায় রেকর্ড হয়। এ ঘটনায় মৃত হাজী কমর উদ্দিনের ওয়ারিশরা বাদী হয়ে জামালপুর সিনিয়র সহকারী জজ প্রথম আদালতে মৃত আমির উদ্দিনের ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে (মোকাদ্দমা ৬৭০/২২) অন্য প্রকার মোকাদ্দমা দায়ের করেন। এতে বিআরএস রেকর্ড সংশোধিত হয়ে আদালত থেকে মৃত হাজী কমর উদ্দিনের ওয়ারিশরা স্বত্ব ঘোষণা ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। এ সময়ের মধ্যেই আমির উদ্দিনের কাছ থেকে নালিশী ওই জমিটি কিনে নেন স্থানীয় মো. দুলাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ওই ব্যক্তি জমিটি নিজের দাবি করে জামালপুর আদালতে একটি সাজানো মামলা দায়ের করেন। সাংবাদিক রাসেল জানান, আমরা ১নং কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। আমির উদ্দিনের ভুল রেকর্ডের বিষয়ে সমস্ত কাগজপত্র এবং আমাদের পক্ষের সমস্ত কাগজপত্র সেখানে দাখিল করি। সবকিছু পর্যালোচনা করে আমাদের পক্ষে রায় দেন গ্রাম আদালত। আমরা মামলার জমির বিষয়ে সরজমিনে রিপোর্টসহ সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহিন আলম সরজমিনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন নি। এমনকি তিনি মামলার সাক্ষীদের কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ না করে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনটি যে মিথ্যা তার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। তিনি জানান, ওই মামলায় ৫নং আসামি মো. আপেল মিয়া নামে কোন আসামি নেই। অথচ মো. আপেল মিয়ার নামে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছেন। নালিশি জমি ৭৫ বছর ধরে আমাদের দখলে রয়েছে। মামলার বাদী মো. দুলাল উদ্দিন মিথ্যা সাজানো নাটক সাজিয়ে আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ৩৬নং আইন ৪(২)/ ৭(৩)/৮(১)/ ১৬ ধারায় আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহিন আলম আমাদের কাগজপত্র নেওয়ার পর কিছু অর্থদাবি করেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে বাদীরপক্ষে পক্ষাশ্রিত হয়ে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে আমি ও আমার পরিবারের যথেষ্ট মানের ক্ষতিসহ অপরাপর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার এসআই শাহিন আলমের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে আইনগত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে এসআই শাহিন আলমের সেলফোনে (০১৭৯৫-০৪০৮৬২) কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জমির দলিলদাতা আমির উদ্দিনের ছেলে মোঃ আ: সোবহান জানিয়েছেন, দুলাল উদ্দিন আমার ফুফাত ভাই। আমার পিতা জীবিত থাকাবস্থায় কৌশলে দুলাল উদ্দিন জমি লিখে নেন। অনেক পরে এটা জানতে পাই। ওই জমিটি আমাদের দখলে আগেও ছিল না। এখনো নেই। আমরা কোন কলহ চাই না।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম সেবা জানান-অভিযোগের তদন্ত চলছে। দোষি সাব্যস্ত হলে এসআইয়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন