চিকিৎসার অভাবে ক্যান্সার আক্রান্ত সাংবাদিক সুলতান এখন মৃত্যু পথযাত্রী

দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন
0


নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

সদা হাস্যোজ্জ্বল মানবিক মানুষ জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টু ডে'র জামালপুর জেলা প্রতিনিধি এম সুলতান আলম মরনব্যধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। অর্থকষ্ট আর উন্নত চিকিৎসা অভাবে সুলতান আলম আজ মৃত্যু পথযাত্রী। হাসপাতালের ব্যয়ভার বহন করতে না পারায় বাড়ি নিয়ে এসেছে স্বজনরা। সুলতানের নির্ঘুম রাত কাটে এখন ক্যান্সারের ক্ষতযন্ত্রার চিৎকারে। স্বামীর নিদারুণ কষ্টে স্ত্রীর বোবা কান্না ছাড়া আর কোন পথ খুঁজে পাচ্ছেন না।

দারিদ্র্যের সাথে সারাজীবন সংগ্রাম করে আপোসহীন এ সাংবাদিক মানবেতর জীবন যাপন করলেও কখনো নীতিভ্রষ্ট হয়নি। নিঃসন্তান সুলতান স্ত্রী নিয়ে একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করলেও কারো করুনা প্রার্থনা করেনি কখনো। 

সুলতান সাংবাদিকতা ব্যতিত আর কোন আয়মূখী কাজে যুক্ত ছিলো না। ফলে টানাপোড়েন সংসারে সঞ্চয় করার মতো কোন সুযোগ ছিলো না। 

এলাকার কোন অসহায় ব্যক্তি অসুস্থ হলে সে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসতো। কোন নারী, শিশু বিপদাপন্ন হলে সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দিতো। 'জীবে দয়া করে যে জন সেইতো সেবিছে ঈশ্বর' এই অমীয় বাক্য চেতনায় ধারণ করে সে মানবকল্যাণে নিজেকে সবসময় সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছে। শুধু মানুষ নয় কোন অবলা প্রাণি বিপদে পড়লে সে পাশে দাঁড়াতো।

সুলতান কখনো ধূমপান করে নাই। ফাস্টফুড খায় নাই। রিচফুডে ছিল তার অনাসক্তি। কখনো সে হোটেলে বসে চায়ের আড্ডায় মেতে থাকতো না। এন্টিবায়োটিকসহ এলোপ্যাথিক ওষুধ সেবন করতো না। হোমিও এবং ভেষজ ওষুধ ছিলো তার ছোটখাটো ওষুখের মূল চিকিৎসা। অথচ নিয়তির কি নির্মম পরিহাস সাধারণ এবং হিসেব নিকেশ করে জীবন ধারণ করা সুলতান আজ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে।

ডাক্তাররা বলেছেন সুলতানকে যথাযথ চিকিৎসা করা হলে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এর জন্যে গুনতে হবে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। সহকর্মীরা স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে যা দিয়েছে সে টাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা বাবদই খরচ হয়ে গেছে। 

মোটা অংকের টাকার জন্য এখন প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় এবং বিত্তবানদের আনুকুল্য। একজন সৎ ও কমিটেড সাংবাদিকের জীবন বাঁচানে ২৫/৩০ লাখ টাকা কোন ব্যপার না। সাংবাদিক কল্যাণ বোর্ড, সরকার, বিত্তবান এবং বাংলাদেশ টু ডে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে সুলতানকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

সুলতানের লেখা খবরে সমাজের কতনা অসঙ্গতি দূর হয়েছে। কত অসহায় মানুষ নতুন জীবনের সন্ধান পেয়েছে। অসুস্থ মানুষ চিকিৎসাসেবা পেয়েছে। অথচ সে আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। তার নিদারুণ কান্নায় আজ আকাশ, বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। তার ঘর জুড়ে কবরের নিস্তব্ধতা ভাঙছে ভয়ানক আর্তনাদে। প্রবল অন্ধকার নেমে এসেছে তার কুঁড়ে ঘরে। 

সবাই যদি একটু একটু করে সহায়তা হাত প্রসারিত করে তাহলে সুলতানের মুখে আবার হাসি ফোটানো সম্ভব। সুলতানের বেঁচে থাকা মানে তার পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখা। সৎ সাংবাদিকতা অব্যাহত রাখা। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)