মোঃ সাইদুর রহমান সাদী |
নতুন বছর ২০২৫-এর আগমন উদযাপন নিয়ে দেশজুড়ে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। কিন্তু নববর্ষের আনন্দ যেন কোনোভাবেই পরিবেশ বা সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশবিদ ও সমাজকর্মীরা। প্রতিবছর আতশবাজি ও ফানুসের মাধ্যমে উদযাপন করা হলেও এর নেতিবাচক প্রভাবগুলি উল্লেখযোগ্য।
আতশবাজি প্রদর্শনের মাধ্যমে নববর্ষ উদযাপন একটি প্রচলিত রীতি হলেও এর রয়েছে ভয়াবহ পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব। আতশবাজি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট শব্দ দূষণ গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে পশুপাখি ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে বা আবাসস্থল ত্যাগ করে। বায়ুদূষণের জন্য আতশবাজির ধোঁয়া বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এতে সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসৃত হয়, যা বাতাসকে বিষাক্ত করে তোলে। শীতের এই সময়ে ধোঁয়া আরও ঘন হয়ে বাতাসের মান মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়, যা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।
ফানুস উড়ানোর সময়ে অনেকেই জানেন না যে এটি অগ্নিকাণ্ডের প্রধান একটি কারণ হতে পারে। জ্বলন্ত ফানুস যখন বাতাসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে, তখন তা ঘরবাড়ি, ফসল বা যেকোনো স্থাপনায় আগুন ধরাতে পারে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে ফানুসের কারণে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফানুস উড়ানোতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক এবং অন্যান্য উপকরণ পরিবেশে অবশিষ্ট থেকে দূষণ সৃষ্টি করে।
পরিবেশ ও প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকে উদযাপন করতে পারেন একাধিক সৃজনশীল উপায়ে:
পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে গেট-টুগেদার: ভালো খাবার, গল্প, গান এবং আনন্দঘন আড্ডার মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণীয় করে তুলুন। প্রাকৃতিক আলোকসজ্জা: ফানুসের বদলে পরিবেশবান্ধব মোমবাতি বা ল্যাম্প দিয়ে সাজান নিজের চারপাশ। মানবসেবা কার্যক্রম: নববর্ষে গরিব ও অসহায় মানুষদের সাহায্য করে প্রকৃত আনন্দ অনুভব করুন। স্থানীয় সংস্কৃতি উদযাপন: সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, কবিতা পাঠ বা নাটকের মাধ্যমে বছরের শুরু উদযাপন করুন।
সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে পরিবেশ, পশুপাখি এবং মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকা। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও যদি এই বিষয়ে সচেতন হয়, তাহলে নতুন বছর হবে পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপদ।
শুভ নববর্ষ ২০২৫! এবারের নববর্ষে হোক নতুন অঙ্গীকার—পরিবেশ ও সবার প্রতি দায়িত্বশীল থেকে আনন্দ ভাগাভাগি করা।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন