সরিষা ফুলের গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ

দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন
0


নিজস্ব প্রতিবেদক \

শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠজুড়ে চোখে পড়ে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসলের মাঠের দৃশ্যপট।

উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় এ মৌসুমে ব্যাপক সরিষার চাষ করা হয়েছে। সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সেজে। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত।

বেড়ে ওঠা গাছ আর ফুল দেখে বেশি ফলনের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকরা। গত বছর স্থানীয় বাজারে উন্নত জাতের সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবারও সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর প্রত্যেক চাষি বেশি মুনাফা লাভ করবে। গত ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেলে এমনি চিত্র দেখা যায়। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। মেলান্দহ উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আমন ছাড়াও জমি থেকে সরিষা ওঠার পর ওই জমিতে প্রচুর বোরোর আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় ও বোরোর ফলন ভালো হয়। গত বছরের তুলনায় এবছর বেশি পরিমাণ সরিষার চাষ হয়েছে। এবছর সরিষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ হাজার ১শ ২০হেক্টর অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ১শ হেক্টর। কৃষকরা অধিকাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, বিনা-৯/১০, সরিষা-১৫, সোনালি সরিষা (এসএস-৭৫) ও স্থানীয় টরি-৭ আবাদ করে।

সরেজমিনে মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরাপাড়া ইউনিয়নের কৃষক চাঁন মিয়া সাথে আলাপকালে জানা যায়, সরিষা চাষে খরচ অনেক কম কিন্তু লাভটা বেশি হওয়ায় অনেকেই সরিষা চাষে আগ্রহী। ক্ষেতে একবার সার প্রয়োগ করলে আর সার দিতে করতে হয় না, তাই অন্য ফসল থেকে পরিশ্রম ও কম দিতে হয় সরিষা চাষে। তিনি আরও বলেন, সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকলে এখানকার কৃষকরা আরো বেশি উপকৃত হতো। একই এলাকার কৃষক নুর-আমিন জানায়, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলো ফলন বেশি হয়। গত বছরের চেয়ে সরিষা আবাদ ভালো হয়েছে। আশা করি লাভও ভালোই পাওয়া যাবো। আমি ৫বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালা থাকলে ফসল ঘরে তুলতে পারবো। এ ব্যাপারে মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, এবারে মেলান্দহ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় বেশি সরিষা চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে এবছর সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় সরিষা চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)