\ মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল \ |
দেশে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। হিমালয় থেকে নেমে আসা শীতল বায়ু, বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্প এবং দেশের অভ্যন্তরীণ কুয়াশা একত্র হয়ে সৃষ্টি করেছে হাড়কাঁপানো শীত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, শৈত্যপ্রবাহ আসন্ন এবং মাসজুড়ে এই শীতের প্রকোপ অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে শীত শুধু সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নয়, স্বাস্থ্যঝুঁকির ক্ষেত্রেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
শীতকালে নানা মৌসুমি রোগের প্রকোপ বাড়ে। ঠান্ডাজনিত অসুখ, যেমন সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, এবং শিশুদের মধ্যে অ্যাজমার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে শীত বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে, তীব্র ঠান্ডায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। শিশু ও বয়স্কদের ত্বকের শুষ্কতা এবং ডিহাইড্রেশনের সমস্যা আরও জটিল হতে পারে।
সাধারণ জনগণকে এ সময় বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। শীতের প্রকোপের সবচেয়ে বেশি শিকার হন দেশের অসহায়, ছিন্নমূল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী। ফুটপাতে বসবাসকারী মানুষ, বিশেষত নারী ও শিশুরা, এই সময় বড় সংকটে পড়েন। তাদের জন্য উষ্ণ কাপড়, কম্বল এবং মৌলিক খাবার সরবরাহ করা একান্ত প্রয়োজন।
শীতের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা ও বায়ুদূষণের মাত্রাও বেড়েছে। আন্তসীমান্ত দূষণ ও স্থানীয় দূষণের ফলে শীতকালে বায়ুতে দূষিত কণার পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়ার আশঙ্কা থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণেরও সচেতন ভূমিকা প্রয়োজন।
শীতকে শুধু একটি মৌসুম হিসেবে বিবেচনা না করে এটি মোকাবিলার জন্য জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, এনজিও এবং সাধারণ মানুষের সমন্বিত উদ্যোগ এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
শীত সবার জন্য উপভোগ্য হতে পারে, যদি আমরা একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হই। তাই মৌসুমি অসুখের বিরুদ্ধে সতর্ক থেকে এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা একটি মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। আসুন সকলে মিলে সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্তদের পাশে দাঁড়াই।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন, জামালপুর।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন