মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল |
গত বছর ১৬ মে ময়মনসিংহ জেলার একটি গ্রাম সফরে গিয়েছিলাম। গ্রামের নাম কাড়াহা, ফুলপুর উপজেলার ৬ নম্বর পয়ারী ইউনিয়নে। ছোট্ট একটি অনুষ্ঠান ছিল, ফসল কর্তন। এই গ্রামেরই একজন চাষি জনাব আবুল হোসেন তাঁর জমিতে প্রচলিত রাসায়নিক সারের পাশাপাশি একটি বাণিজ্যিক সংস্থা কর্তৃক পরিবেশিত জৈব সার যথাক্রমে টোটাল রাইস (বিআর), গোল্ডেন গ্রো ও হ্যাপি গ্রো ব্যবহার করে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কী ফলাফল পেলেন তা দেখানোর জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এবং একজন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে তাতে আমার যোগদান করতে হয়েছিল।
বলাবাহুল্য টিআর হচ্ছে ধানের পূর্ণাঙ্গ জৈব সার। এতে হিউমিক এসিডসহ অত্যাবশ্যকীয় অন্যান্য জৈব যোগ রয়েছে এবং প্রতি একরে ১০ কেজি হারে অন্যান্য সারের সাথে ব্যবহার করতে হয়। এই সারের ব্যবহার মাটির রাসায়নিক ও ভৌত পরিবর্তন আনয়ন করে। অধিক কুশি উৎপাদন করে এবং ধানকে পুষ্ট করার সাথে সাথে মাটির অনুজৈবিক কার্যাবলীও বৃদ্ধি করে। গোল্ডেন গ্রো হচ্ছে উদ্ভিদের পুষ্টিজনিত এনজাইম, ভিটামিন ও এমিনো এসিডবুকে তরল সার। অঙ্কুরোদগম, শিকড় বৃদ্ধি, শিকড় বিন্যাস ও ফলন বৃদ্ধি এর কাজ। পক্ষান্তরে হ্যাপি গ্রো কুড়ি ও ফুল উৎপাদনে সহায়ক অপর একটি তরল সার । সব ধরনের শস্য, শাক-সবজি, ফল ও অন্যান্য গাছপালার ফুল, ফল ও পাতা ঝরে যাওয়া রোধ করে এবং ফসলের সজীবতা নিশ্চিত করে। কৃষক জনাব আবুল হোসেন পাশাপাশি তার দুখণ্ড জমিতে ব্রি-২৯ নং ধান চাষ করেছেন। একখণ্ডে প্রচলিত পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন, অপরখণ্ডে রাসায়নিক সারের সাথে উপরে বর্ণিত জৈব ও তরল সার ব্যবহার করেছেন। উভয় প্লটে পরিচর্যা একই রকম ছিল এবং প্রথমোক্ত প্লটকে তিনি কন্ট্রোল প্লট হিসেবে ব্যবহার করেছেন। উভয় প্লটে একই সময় চারা লাগানো হয়েছিল এবং একই সময়ে ধান পেকেছে। কর্তন অনুষ্ঠানে স্থানীয় কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ধান কর্তন ও মাড়াইয়ের উপর ওজন দিয়ে দেখা গেছে যে, কন্ট্রোল প্লটে যেখানে একর প্রতি ৮০ মণ ধান উৎপাদিত হয়েছে সেখানে জৈব সার প্রয়োগাধীন জমিতে উৎপাদিত হয়েছে একর প্রতি ৯৮ মণ। গোছার ব্যাপ্তি তথা গোছা প্রতি ছড়ার সংখ্যা এবং ছড়া প্রতি ধানের সংখ্যাতেও ব্যবধান ছিল লক্ষণীয়। কন্ট্রোল প্লটে যেখানে প্রতি গোছায় ৩২টি ছড়া এবং প্রতি ছড়ায় ১৭৫টি ধান উৎপন্ন হয়েছে সেখানে নতুন সার ব্যবহারাধীন জমিতে প্রতি গোছায় ছিল ৪২টি ছড়া এবং প্রতি ছড়ায় ১৯৫টি ধান। আবার প্রথমোক্ত জমির তুলনায় শেষোক্ত জমির ধানের ছড়ায় চিটা ও অপুষ্ট ধানের সংখ্যাও ছিল উল্লেখযোগ্য হারে কম। এই ফলাফলে এলাকার কৃষকদের মধ্যে আমি একটি অনুপ্রেরণার পরিবেশ লক্ষ্য করেছি।
আমাদের দেশে পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে রাসায়নিক সারের প্রচলন শুরু হয়। প্রথম অবস্থায় বিনা পয়সায় এই সার দেয়া হতো, পরবর্তীকালে নামমাত্র মূল্যে এই সার বিতরণ করা হতো। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ১৯৭৩-৭৪ সালে প্রথমবারের ন্যায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের উপর থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। বিনামূল্যে হোক অথবা নামমাত্র মূল্যে রাসায়নিক সার ব্যবহারে কৃষকদের অনীহা ছিল মাত্রাতিরিক্ত। তারা সারের বিরোধিতা করেছেন এই যুক্তিতে যে, সার জমির স্বাভাবিক উর্বরতা নষ্ট করে দেয়। এতে খাদ্যশস্য, তরিতরকারির স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে কৃষি বিশেষজ্ঞ হয়েছি তারা অশিক্ষিত কৃষকদের আশঙ্কাকে অমূলক বলেছি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাদ্যের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য শেষ পর্যন্ত মানুষ রাসায়নিক সার ব্যবহার করে অধিক ফলনশীল ফসলের চাষ করতে বাধ্য হয়েছে এবং অনিবার্যভাবে এর সাথে রাসায়নিক সার কীটনাশক, উফশী জাতের বীজ ও সেচ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারিত হয়েছে, ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৬১ সালে আমাদের জনসংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৪ লাখ। আজকে প্রায় ৬৩ বছর পর আমাদের জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি প্রায় তিন গুণ। ১৯৬১ সালে এ দেশে অধিক ফলনশীল জাতের ফসল চাষের প্রচলন ছিল না। কৃষকরা স্থানীয় জাতের ধান চাষ করতেন। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও সেচ প্রযুক্তি এসেছে ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৮ মেয়াদে। একষট্টি সালে একর প্রতি উৎপাদন হতো সর্বোচ্চ ১০ মণ। কাড়াহা গ্রামের ফসল কর্তনের ফলাফলকে যদি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা যায়, তাহলে তখনকার তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ৮ থেকে ৯.৮ গুণ বেশি। অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় একর প্রতি ধান উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় সমান সমান। আমাদের দেশে আগে গম উৎপাদন হতো না, এখন প্রচুর গম ও ভুট্টাও উৎপাদন হচ্ছে এবং আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। বিভিন্ন অঞ্চলে বহু কৃষক আছেন যারা প্রতি একর জমিতে একশ’ থেকে দেড়শ’ মণ ধানও উৎপাদন করছেন। একজন পারলে আরেকজন পারবেন না কেন? এটি একটি বিরাট প্রশ্ন। প্রাতিষ্ঠানিক সাপোর্ট, পুঁজি ও প্রযুক্তির নৈকট্য এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।
রাসায়নিক সারের প্রতি অনীহা এখন আর মানুষের মধ্যে নেই, খরার মোকাবিলায় ভূ-উপরিস্থ পানির অনুপস্থিতিতে ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে সেচাবাদ করাকে এক সময় মানুষ খোদার প্রতি বিদ্রোহ বলে মনে করতো। গভীর নলকূপ খননের প্রাথমিক যুগে ষাটের দশকের প্রথম দিকে কুমিল্লাতে এর বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছে। গভীর নলকূপ খননকারী ঠিকাদারের তাঁবু জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন সেই বাধা নেই।
আধুনিক প্রযুক্তিকে কৃষকরা এখন স্বাগত জানাতে শিখেছে। প্রযুক্তির সাথে যদি প্রয়োজনীয় পুঁজির সংস্থান হয় তাহলে দুনিয়ার যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের দেশের কৃষকরা অধিকতর গতিশীলতা ও উৎপাদনশীলতার প্রমাণ দিতে পারেন। বাংলাদেশে কৃষি ক্ষেত্রে আজকের যে সাফল্য তার কৃতিত্ব সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচ প্রযুক্তির। আবার প্রযুক্তির প্রসারে আইআরডিপি-বিআরডিবি আওতাধীন দ্বিস্তর বিশিষ্ট সমবায় সমিতিসমূহের অবদান অনস্বীকার্য। দুর্ভাগ্যবশতঃ এই সমিতিগুলো বর্তমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এ আমি আগেই বলেছি, রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রতি এই দেশের কৃষকদের অনীহা ছিল সুস্পষ্ট। তাদের ধারণা ছিল এতে জমি নষ্ট হয়ে যায়। আমরা তাদের ধারণাকে ভিত্তিহীন বলেছিলাম। ছয় দশক পর দেখা যাচ্ছে তাদের ধারণাই সঠিক ছিল আমাদের ধারণা নয়। তারতম্য বিচার না করে অধিক ফলন পাবার আশায় ব্যাপকভাবে রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে সারা দেশে জমির উর্বরতার উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। ক্ষারত্ব ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারের ব্যবহার আনুপাতিক হারে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে না। বরং কৃষি আধুনিকায়নের পথ প্রদর্শক কুমিল্লাসহ বেশকিছু জেলায় একটি পর্যায়ে এসে উৎপাদন স্থবির হয়ে পড়ছে। কৃষকরা অসহায়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, রাসায়নিক সার ব্যবহারজনিত কারণে মাটির অনুজৈবিক উপাদান নষ্ট হওয়ার ফলেই এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও ভূগর্ভস্থ পানির রাসায়নিক তলানিও লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। আবার চাষাবাদের একঘেঁয়েমি তথা Monoculture জনিত কারণেও জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ এলাকায় উৎপাদনের ক্ষেত্রে Law of Diminishing return কাজ করছে বলে অনেকে মনে করেন। এতে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং বিভিন্ন কারণে জমির পরিমাণ কমছে। এই অবস্থায় আমাদের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হতে দেয়া যায় না। বিপর্যয় যা ঘটার ঘটেছে। এখন প্রয়োজন জমির গুণাগুণ বা উর্বরতার পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যতে বিপর্যয় রোধের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ। সুষম পদ্ধতিতে জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সারের ব্যবহারই এ ক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা করতে পারে। আমি একর প্রতি গড় উৎপাদনের কথা বলছিলাম। আমাদের এই উৎপাদন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন বললে অত্যুক্তি হবে না, আবার আমাদের দেশে একই মাঠে পাশাপাশি দু’টি প্লটের উৎপাদনের ব্যবধানও সুস্পষ্ট। এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, আমরা কি পারি না প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সমতা এনে এই বৈষম্য হ্রাস করতে? অনেক কৃষক সার ব্যবহার করেন কিন্তু ব্যবহারের নিয়ম-কানুন জানেন না, তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই, ফলে পয়সা নষ্ট হয়, জমিও নষ্ট হয়। আনুপাতিক উৎপাদন বৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত হন। দেশের কৃষি সমবায় সমিতিগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে সদস্যদের যদি প্রশিক্ষণ ও গ্রুপ বৈঠকের মাধ্যমে সার ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহারের বিধি শিক্ষা দেয়া হয় তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধিতে তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন। ফুলপুরসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমি যা দেখেছি তাতে আমি আশাবাদী। প্রযুক্তি এখন মানুষের নাগালের মধ্যে। কৃষকরা পর্যাপ্ত ঋণও পাচ্ছেন; তবে এই সুদ ঋণমুক্ত হলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। সরকারে সাপোর্ট এবং কৃষকদের নিজস্ব সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে যদি প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয় তাহলে দেশ ও জাতি উপকৃত হতে পারে।
কৃষি ক্ষেত্রে বর্তমান দুটি প্রযুক্তি অনুসরণ করা হয়। এর একটি হচ্ছে পণ্য উৎপাদনভিত্তিক প্রযুক্তি (process technology) আর অন্যটি প্রক্রিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি (product technology) কি করবো, কি দিয়ে করবো এটা হচ্ছে উৎপাদনভিত্তিক প্রযুক্তির মূল কথা। অর্থাৎ একটা বিশেষ পণ্য উৎপাদন করতে গেলে যে বীজ, সার কীটনাশক ও সেচের প্রয়োজন তা সংগ্রহ করাই এখানে মুখ্য বিষয়। এগুলো একবারই ব্যবহার করা যায় এবং যতবার উৎপাদন করা হবে ততবারই সেগুলো কিনতে হবে। আমাদের দেশে এই প্রযুক্তি সফল প্রমাণিত হয়নি। উদাহরণস্বরূপ: ১৯৯২ সালে সরকারই কৃষি ঋণ মওকুফ করেছিলেন। কিন্তু দাতা সংস্থাগুলোর চাপে এই সুবিধা সমবায়ী কৃষকদের দেয়া হয়নি। ফলে তার অর্থের অভাবে উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, সেচের পানি এমনকি পশুখাদ্যও কিনতে পারেন নি। ফলে উৎপাদনে বিরাট সংকট দেখা দেয়। এই বাস্তবতা প্রযুক্তি নির্বাচনের প্রাক্কালে নিম্নোক্ত প্রশ্নসমূহের জবাব খুঁজতে আমাদের বাধ্য করে:
১. কৃষি ঋণ দুষ্প্রাপ্য ও অনভিগম্য হলে কী করতে হবে
২. জমি অপর্যাপ্ত ও অনুর্বর হলে চাষির করণীয় কী
৩. উন্নত জাতের বীজ দুষ্প্রাপ্য ও ব্যয়বহুল হলে কিভাবে চাহিদা মিটাতে হবে
৪. রাসায়নিক সার পাওয়া না গেলে এবং মূল্য বেশি হলে করণীয় কী
৫. ক্ষুদ্র কৃষকরা যদি কৃষি যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ও অন্যান্য যন্ত্রের সুবিধা না পান তাহলে কী করতে হবে
৬. কীটনাশকের ব্যয় ও ক্ষতির পরিমাণ কিভাবে লাঘব করা যায়
৭. গৃহপালিত জীবজন্তুর প্রজনন সম্ভাবনাকে কিভাবে উন্নত করা যায়
৮. প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ঝুঁকির মুখে পুনর্বাসনের আশু পন্থা কী কী
৯. খামারজাত পণ্যের নাট্যমূল্য প্রাপ্তি ও উপার্জন বৃদ্ধির জন্য কৃষক পর্যায়ে কি কি করণীয় রয়েছে
উপরোক্ত নয়টি প্রশ্নের জবাবের মধ্যে প্রক্রিয়াভিত্তিক প্রযুক্তির মূল কথা নিহিত রয়েছে। আইপিএম, গোবর, হাঁস মুরগীর বিষ্ঠা, পচা আবর্জনা সার তৈরি ও ব্যবহার প্রণালী, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ প্রভৃতি সম্পর্কে যদি কৃষকরা একবার পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ পান তাহলে তাদের পরনির্ভলশীলতা হ্রাস পায়। এতে সার, বীজ, ওষুধ কেনার উদ্দেশ্যে ঋণ পাবার জন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হয়না। কাউকে ঘুষ দিতে হয়না এবং জমির স্বাভাবিক উর্বরতা অক্ষুন্ন রেখে ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভবপর।
পশু সম্পদ উন্নয়নের বহু প্রযুক্তি এখন আমাদের দেশেই পাওয়া যায়। জাত উন্নয়নের জন্য কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের সুবিধা, পশু খাদ্যের পুষ্টিমান বৃদ্ধির জন্য ষ্ট্র ট্রিটমেন্ট, মোলাসেস ব্লক তৈরির ন্যায় সস্তা প্রযুক্তি এখন সর্বত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও নির্ভুল জ্ঞানদানের দায়িত্ব সম্প্রসারণ কর্মীদের। এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালিত হলে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব আনা অসম্ভব কিছু নয় বলে আমার বিশ^াস। একইভাবে গরুর গর্ভ ধারণ ও বাচ্চা প্রসবের মেয়াদ হ্রাস এবং দুধ দানের সময় বৃদ্ধিও অব্যাহত গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন