মন্তব্য কলাম : জামালপুরের কৃষকগণ উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের চিনেই না

\ মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল \

আশ্চর্য্যের বিষয় হলো জামালপুরের কৃষকগণ উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের চিনেই না। আর চিনবেই বা কি করে, তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে কাজ করার বদলে ঘরে বসে কাজ সম্পাদন করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। এ অবস্থার অবসান জরুরি।

এদিকে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্ব হলো-কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠের পরিকল্পনা সরাসরি কৃষক পর্যায়ে বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করা।মাঠে সার্বক্ষণিকভাবে উপস্থিত থেকে কৃষককে সার্বিক সহায়তা করা। কৃষকদের সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত করা। কৃষকের মাঠ ফসল ও উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের সমস্যা সমাধানের জন্য বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সকল শ্রেণীর কৃষককে কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদান করা।  কৃষকদের সাথে থেকে তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে ও সম্ভাব্য সমাধানে সাহায্য করা। কৃষকদের তথ্য চাহিদার ভিত্তিতে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন কর্ম পরিকল্পনার প্রস্তাব উপজেলায় প্রেরণ এবং উপযুক্ত সম্প্রসারণ কর্মকান্ড স্থির করার লক্ষ্যে উপজেলা পরিকল্পনা কর্মশালাকে সহায়তা প্রদান করা। মৌসুমভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনার সাথে সংগতি রেখে পাক্ষিক পরিদর্শন কর্মসূচি প্রণয়ন ও তত্ত্বাবধায়ক অফিসারের অনুমোদন নিয়ে বাস্তবায়ন, মাঠে  অসমাধানযোগ্য সমস্যা, উপজেলা প্রশিক্ষণ/রিপোর্টং দিবসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উপায় জেনে নিয়ে কৃষককে পরমর্শ প্রদান।উৎপাদন কর্ম পরিকল্পনায় ও স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে পরিকল্পিত সম্প্রসারণ কার্যক্রম যেমনঃ প্রদর্শনী, উদ্ভুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণ, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, দলীয় আলোচনা, অংশীদারিত্বমূলক ছোট আকৃতির পরীক্ষামূলক প্লট স্থাপন, মাঠ দিবস পরিচালনা করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য তথ্য প্রাপ্তির নিমিত্তে জরিপ পরিচালনা করা। ব্লকের সকল কৃষিভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ ও এসএএও ডাইরিতে সংরক্ষণ করা যেমনঃ প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসংখ্যা, আবাদি জমির পরিমাণ, প্রচলিত শস্য বিন্যাস, বিভিন্ন উপকরণ চাহিদা, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারকারী কৃষকের সংখ্যা ও তাদের সফলতার চিত্র, সমস্যা/প্রতিবন্ধকতা, উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ পদ্ধতি, ঋণ প্রাপ্তির সুবিধা-অসুবিধা, কৃষি পণ্যের সংরক্ষণাগার ইত্যাদি।ডিএই এর আওতাভূক্ত সকল প্রকল্প এবং প্রকল্প বহির্ভূত এলাকার চাহিদাভিত্তিক উদ্ভুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণ প্রদান করা। অন্যান্য সহযোগিতা, সংস্থার সহযোগিতা ও তথ্যাদি পেতে কৃষকদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠায় কাজ করা।

খাদ্য শস্যসহ বিভিন্ন উৎপাদিত ফসলের নমুনা শস্য কর্তন করে মোট উৎপাদন নির্ণয় করে উপজেলায় প্রেরণ। ব্লকের বীজ, সার ডিজেল বিদ্যুৎসহ অন্যান্য উপকরণের দৈনন্দিন পরিস্থিতি উপজেলা কৃষি অফিসার/সার পরিদর্শক, কীটনাশক পরিদর্শককে অবহিত রাখা। সদস্য সচিব হিসেবে ইউনিয়ন কৃষি কমিটির সভা আয়োজন করা এবং কার্য বিবরণী উপজেলা কৃষি কমিটির সভাপতির নিকট পেশ করা।

অথচ দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য জামালপুর জেলা সদর থেকে শুরু করে অপরাপর উপজেলার  ইউনিয়নের কৃষকগণ জানেই না দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কে? তাহলে সেই অফিসারগণ কি আদৌ দায়িত্ব পালন করছেন এ নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা আশা করি অচীরেই এই অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে নিজেদের শুধরে নিবেন জামালপুর জেলার ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগণ। পাশাপাশি তাদের কৃতকর্মকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন, জামালপুর।