মন্তব্য কলাম : কৃষিপণ্য পরিবহনে রেল ব্যবহারের সুবিধা বৃদ্ধি জরুরি

দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন
0

\ মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল \

নিত্যপণ্যের পরিবহন ব্যয় কমাতে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ চালু করেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিশেষ এ ট্রেনে প্রতি কেজি সবজি ও কৃষিপণ্য বহনে খরচ হতো ১ টাকা ০৮ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৫৬ পয়সা। ট্রেনে সবজি ও ফলের পাশাপাশি হিমায়িত মাছ, মাংস ও দুধ পরিবহনের ব্যবস্থা ছিল। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এই ট্রেনে চেপে ঢাকায় যেতে পারতেন বিনা ভাড়ায়।

দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন কয়েকদিন চলাচল করেছে। তবে পণ্য পরিবহনে কৃষি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের তেমন সাড়া মেলেনি। গত ২৬ অক্টোবর সকালে কোনো পণ্য ছাড়াই শূন্য লাগেজে ঢাকার উদ্দেশ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায় কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন। রহনপুর থেকে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯ লাখ টাকা। আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় পাঁচটি রুটে বিশেষ ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, রেলওয়ের এই উদ্যোগ কেন মুখ থুবড়ে পড়ল। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ট্রেনে পণ্য পরিবহনের খরচ কম হলেও কুলি ও অন্য পরিবহন খরচ যোগ করলে সড়কপথের চেয়ে রেলপথেই বরং ব্যয় বেশি। ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন, স্টেশন থেকে মোকাম পর্যন্ত পণ্য নিতে কোনো না কোনো স্তরে পরিবহন খরচ ও কুলি খরচ লাগে। শুধু বিশেষ ট্রেন দিয়ে কোনো পণ্য মাঠ থেকে মোকাম পর্যন্ত নেয়া সম্ভব নয়। ট্রেনে পণ্য পাঠাতে চারবার পণ্য লোড-আনলোড করতে হয়।

ট্রেনের সময়ও ভাবনার বিষয়। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, বিকেল কিংবা রাতে পণ্য পরবহন করলে পরদিন সকালে মোকামে পৌঁছনো যায়। একে তো ট্রেন চলে সকালে, এর সঙ্গে রয়েছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। যে কারণে সময়মতো কৃষিপণ্য মোকামে পৌঁছানো যায় না। আবার সবজি জাতীয় পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ফসলের মাঠ বা প্রান্তিক আড়ত থেকে সরাসরি মোকামে পণ্য পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা থাকলে কৃষি উদ্যোক্তরা বিশেষ ট্রেন ব্যবহারে আগ্রহী হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাস্তবিক কারণেই কাজটা সহজ নয়, চাইলেই রাতারাতি রেললাইন সম্প্রসারণ করা যায় না। তবে রেলস্টেশন পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের সুলভ কোনো ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। বিশেষ ট্রেন চলাচলের সময় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সমন্বিতভাবে কাজ করলে একটি সমাধান মিলতে পারে বলে আমরা আশা করতে চাই।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন, জামালপুর।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

আমাদের ওয়েবসাইট কুকি ব্যবহার করে থাকে। Check Now
Ok, Go it!