ছাইদুর রহমান।।
জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনা পশ্চিম বাজারে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতু । এজন্য জেলা প্রশাসন নদের উভয়পাশে ভুমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু গত দুই বছর অতিবাহিত হবার পরেও ভুমি মালিকা তাদের জমি ও স্থাপনার টাকা পায়নি। জমি ও স্থাপনার টাকা না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নান্দিনা বাজার অংশে সেতুর ৩টি পিলারের নির্মাণ কাজ শুরুই করতে পারেনি। এতে ব্রিজের নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০১৭ সনে নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতু প্রকল্প একনেকে পাশ হয়। ২০২২ সনের ২০ জানুয়ারি সেতুর টেন্ডার আহবান করা হয়। গত ২০২২সনের ১৬ নভেম্বর সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
গত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতুর জন্য একশত ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় । মুল সেতু ৩২৫ মিটারসহ সর্বমোট দৈর্ঘ্য হবে ৬শ ৬ মিটার। আর প্রস্ত ১০মিটার। নদের মাঝখানে স্টিল ট্রাকচারের সেতুটি নান্দিনা বাঁশহাটায় সেতুর প্রধান মুখ নামিয়ে দেয়া হবে। সেখানে উঠানামার জন্য একটি গোল চত্বর তৈরী করা হবে। সেতুর লক্ষ্মীরচর প্রান্ত থেকে বারুয়ামারী বাজার পর্যন্ত নতুন প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
আগামী ২০২৫ সনের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর মালিকাধীন মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ব্রিজের মোট পিলারের সংখ্যা ১৬টি। এর মধ্যে নান্দিনা বাজার অংশে ৮টি এবং লক্ষ্মীরচর অংশে ৮টি পিলার রয়েছে। লক্ষ্মীরচর অংশে ৮টি পিলারের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। আর নান্দিনা বাজার অংশে ৮টির মধ্যে ৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো বাকী রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি পিলারের নির্মাণ কাজ। নান্দিনা বাজার অংশে যে ৩টি পিলারের কাজ বাকী রয়েছে সেখানে রয়েছে পাকা বসতবাড়ী ও দোকানপাট। জমির মালিকদের নামে ইতিমধ্যে ৪ দফা ও ৭ দফার নোটিশ প্রদান করা হলেও এখনো তাদের নামে ৮ দফার নোটিশ প্রদান করা হয়নি। এতে ভুমি ও স্থাপনার টাকা থেকে বঞ্চিত রয়েছে মালিকরা।
প্রসঙ্গক্রমে ভুমি ও বহুতল বাসার মালিক লোকমান হোসেন হিরা জানান, জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ শাখা থেকে আমাদের কাছে ইতিমধ্যে ২টি নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ৮ দফার টাকার নোটিশ আমরা এখনো পায়নি। জমি ও স্থাপনার টাকা না দেয়া হলে আমরা ব্রিজের নির্মাণ প্রকল্প স্থান থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেবো না। আব্দুর রউফ ডা: জানান, আমরা এখনো টাকা পায়নি। টাকা না পেলে স্থাপনা সরাবো না। প্রায় শতাধিক জমির মালিক ও স্থাপনার মালিক এবং ব্যবসায়ী জানান একই কথা। তিন বছর মেয়াদী ব্রিজের কাজ শেষ হতে পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময় লেগে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
এদিকে জামালপুরস্থ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডির) একটি সূত্র জানায়, ভুমি অধিগ্রহণের বরাদ্দকৃত টাকার আছে। আমরা আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে নান্দিনা-লক্ষীরচর ব্রিজের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি ও স্থাপনা মালিকদের কাছে টাকার চেক বিতরণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বেলাল জানান, সেতুটির জন্য চরবাসীকে বহুযুগ অপেক্ষা করতে হয়েছে। বহুদিনের প্রত্যাশিত নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতু এখন বাস্তবায়নের পথে। সেতু নির্মিত হওয়ায় চরের মানুষ অনেক খুশি।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন