নান্দিনা অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা মোবাইল আসক্তির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত

দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন
0


ছাইদুর রহমান ||

সারাদেশের ন্যায় জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনা অঞ্চলসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দিন দিন মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। সময় পেলেই তারা রাস্তার পাশে, রেললাইনের উপর, গাছের নিচে, ঝোপের পাশে স্মার্টফোন নিয়ে বসে যাচ্ছে। মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব ও ভিডিও গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে শিক্ষার্থীরা। এতে লেখাপড়ায় তারা ক্রমেই অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। পিছিয়ে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের মেধা। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অভিভাবক ও অভিজ্ঞ মহলে দেখা দিয়েছে নানা দুশ্চিন্তা। স্কুল কলেজ, মাদরাসা থেকে অনেকেই ঝরে পড়ছে। মেয়ের বাবা তার মেয়েকে অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে অবস্থা মোটেও সন্তোষজনক নয়। 

জানা গেছে, নান্দিনা ও আশপাশের সব এলাকায় বিকেলে হলেই মোবাইল ফোন নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছে তারা। প্রায় প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর হাতে রয়েছে মোবাইল ফোন। বিশেষ করে স্মার্ট ফোন। তারা দিন বা রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব ও গেম খেলে সময় পার করছেন। রাস্তার ধারে, গাছ তলায়, নদীর ঘাটে, রেল স্টেশনে বা কোনো ছায়া যুক্ত গাছের নিচে, বাগানে বসে মোবাইল ইন্টারনেটে চ্যাট নিয়ে ব্যস্ত। কম পয়সার অফার, ফ্রি ওয়াইফাই পেয়ে ‘পছন্দের’কারও সঙ্গে রাতভর কথা বলছে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। 

বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে, সৃজনশীলতা থেকে দূরে থেকে মন্দের প্রতি আকর্ষিত হওয়া, পড়াশোনা বাদ দিয়ে অহেতুক ঘুরে বেড়ানো, মোবাইল ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা, ফেসবুক-টুইটারের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের নেশায় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ আসক্ত হওয়ার বিষয়টি এখন কারোরই অজানা নয়। নতুন নতুন সফটওয়্যার আপডেট করার মতো প্রতি মুহূর্তে গেটআপ, মেকআপ, চলন-ধরন ও মতের পরিবর্তন তাদের মানসিক বিকাশ, স্বকীয়তাবোধ, ভবিষৎ জীবন গঠনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে; নষ্ট হচ্ছে সৃজনী ও জীবনী শক্তি। এতে মোবাইল কোম্পানি ও ফাস্টফুডের দোকান মালিকসহ মধ্যস্বস্ত¡ভোগীরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অভিভাবক এবং আগামী প্রজন্ম। ফলে  জাতীয় জীবনের জীবনী শক্তি ক্রমেই দুর্র্বল ও প্রাণহীন হতে শুরু করেছে।

জানতে চাইলে এক শিক্ষক জানান মোবাইলের পাশাপাশি ফেসবুকেও আসক্তি বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। এগুলো শিক্ষার উপর বিরূপ ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সারাক্ষণ মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মেধাশুন্য হবার পাশাপাশি চোখ ও শরীরের ক্ষতি সাধন হচ্ছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। 

কথা হয় নান্দিনা মহারাণী হেমন্ত কুমারী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্তক শিক্ষক আলহাজ্ব মোশারফ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, আগেকার দিনে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিকেল হলে খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। অথচ এখনকার ছেলে মেয়েরা ওই সময়টা মোবাইলে পার করছে। এতে তাদের লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নান্দিনা নেকজাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র চন্দ্র সূত্রধর বলেন, মাধ্যমিক স্তর পেরোনোর আগে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ব্যবহার করা উচিত না। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)