নিজস্ব প্রতিবেদক \
জামালপুর শহরের সর্দারপাড়ায় এমএ রশীদ হাসপাতালে সিজারে বাচ্চা প্রসবের পর হাসি খাতুন (৩২) নামে চার সন্তানের এক জননীর মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তারের অবহেলা, ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এ মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। মৃত হাসি খাতুন সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের শীতলকুর্শা গ্রামের নুরুল মল্লিকের স্ত্রী। স্বজনরা জানান, গত ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এমএ রশীদ হাসপাতালে সিজারের জন্য হাসিকে ভর্তি করা হয়। গত ১ নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত চলে অপারেশন। বাচ্চা প্রসবের পর রোগীর অবস্থা শোচনীয় হলে তাকে দ্রুত ওই হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ডাক্তাররা আশ্বস্ত করেন যে রোগীকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১২ ব্যাগ ব্লাড রোগীকে দেওয়া হয়। ওই হাসপাতালের ডাক্তার রোমানা আরমান সিজার করেন। এতে সহযোগিতা করেন ইকোলজি সার্জন ডাক্তার সিদ্দিকুর রহমান ও জেনারেল সার্জন ডাক্তার কামরুজ্জামান। হাসি খাতুনের মা রাবিয়া বেগম (৬৫) বলেন, আমার একমাত্র মেয়েকে ডাক্তাররা মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই। হাসি খাতুনের আরও দুইটি বাচ্চা রয়েছে। তারা হলো, আরাফাত (৮) নুসরাত (৬)। এছাড়া সিজারে তার একটি ছেলে বাচ্চা হয়েছে। রোগীর দেবর মো. আব্দুল হাকিম বলেন, সিজারের সময় ভুলে রোগীর নার্ভ কেটে ফেলেছেন ডাক্তার। তারা এই জটিল অবস্থা উত্তরণ করতে পারবে না জেনেও রোগীকে রেফার্ড না করে হাসপাতালেই রেখে দেন। এটা তাদের চরম গাফেলতি। রোগী রাতে মারা গেলেও তারা নাটক সাজিয়ে সকাল পর্যন্ত আইসিইউতে রেখে দেন।
রোগী ননদ রিমা বেগম বলেন, আমরা বারবার রোগীর কাছে যেতে চাইলেও তারা যেতে দেয় নাই। উল্টো বলেছে রোগী ভালো আছে, আপনারা টাকার ব্যবস্থা করেন। তাদের অবহেলার কারণেই আমার ননদটা মারা গেলো। এ বিষয়ে এমএ রশীদ হাসপাতালের ম্যানেজার সিব্বির আহম্মেদ কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে রোগীর স্বজনদের তিনি জানিয়েছেন, 'আপনারা রোগী নিয়ে চলে যান। আমরা কর্তৃপক্ষ মিলে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তার তিনটি সন্তানদের জীবনে চালাতে যেন সহায়ক হয় এমন একটা কিছু করবো। বর্তমানে আপনাদের যে টাকা খরচ হয়েছে সেই টাকাও ফেরতের ব্যবস্থা করছি।'
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন