|
মোঃ রাশেদুর রহমান রাসেল |
আতঙ্কের বিষয়, কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না জাল টাকার বিস্তার। জাল টাকাসহ প্রায়ই ধরা পড়ছে অপরাধীরা। সাধারণত কোনো মেলা, ঈদে পশুর হাট ও অধিক জনসমাগম অনুষ্ঠানে তারা জাল টাকা ব্যবহার করে বেশি। মুদ্রা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা বেশ 'অভিজ্ঞ' এবং তারা গ্রেপ্তার হলে আইনের ফাঁকফোকরে জামিন নিয়ে বেরিয়ে একই কাজে ফের সম্পৃক্ত হয়। তাদের স্বপ্ন রাতারাতি বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়া। তারা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে পুনরায় একই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি, তাদের অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে; তারপর জামিনে রেবিয়ে তারা পুনরায় একই কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে।' টাকা জাল করার সঙ্গে জড়িত অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে আসছে। জাল টাকার কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা হলেও অপরাধীদের অধিকাংশই খালাস পেয়ে যায়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় জাল টাকা তৈরি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসামিরা খালাস পেয়ে যায়, কারণ সাক্ষীর অভাব। যে এলাকা থেকে জাল টাকার কারবারিকে ধরা হলো সেই এলাকায় স্থানীয় কাউকে সাক্ষী করা হলো। সেই সাক্ষী দুই-একবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার পর পরবর্তী সময়ে আর আসেন না। তো দেখা গেল সাক্ষীর অভাবে আসামি খালাস পেয়ে গেল। মুদ্রা জালকরণ, প্রস্তুত, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দন্ডবিধি কয়েকটি ধারায় মামলা করা হলেও পুরোনো আইনের 'দুর্বল ধারার' কারণে অপরাধীরা বেরিয়ে যায়।
'জাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ আইন-২০২০' আইনে টাকা মুদ্রণকরণ, ক্রয়-বিক্রয়সহ ১৪ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার দায়ে সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদন্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড এবং সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা এক কোটি টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পুরাতন আইনে জাল টাকার কারবারি ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায় আসামিরা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। টাকা যাচাইকালে জাল টাকা ধরা পড়লে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা মনে করি, নতুন আইনে বিচারের পদ্ধতি যেন সহজ হয়। তিন মাসের মধ্যে এসব অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে পারলে অপরাধীরা সাজা পাবে এবং এই অপরাধ কমে আসবে। আমরা চাই জালটাকার কারবারীরা শাস্তির আওতায় আসুক।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন