জামালপুরে বেসরকারি এম এ রশিদ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় হাসি খাতুন (৩০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। রবিবার দুপুর ১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সিভিল সার্জন ফজলুল করিম।
জানা যায়, গত শুক্রবার জামালপুর এম এ রশিদ হাসপাতালের ডা. রুমানা আরমান বিকেলে প্রসুতি হাসি খাতুনের সার্জারী করে। সার্জারি করার পর নাড় কেটে রক্তক্ষরণের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসূতি রোগীর মৃত্যু হয়।
আরও জানা গেছে, গত শনিবার দিবাগত রাত্রে জামালপুরে এম এ রশিদ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় হাসি খাতুন (৩০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মৃত্যুর পরেও ১৪ ব্যাগ রক্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে। মৃত্যুর পরে ১৪ ব্যাগ রক্ত মৃতব্যক্তির শরীরে কিভাবে দেওয়া হয়েছে এ নিয়ে জেলাজুড়ে নানা মহলে বিভিন্ন আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নিহত হাসি খাতুন শরিফপুর ইউনিয়নের শিতলকুর্শা গ্রামের নূরুল মল্লিকের স্ত্রী। তাদের আরাফাত (৭) ও নুন মনি (৫) বছরের এক পুত্রসন্তান ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তৃতীয় সন্তান প্রসবের সময় এ ঘটনা ঘটে। তবে নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে। অপারেশন করতে প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায় বলে জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। তারা আরও বলেন, একপর্যায়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগীর প্রচুর রক্তপাত হচ্ছে সেজন্য প্রচুর রক্ত লাগবে। সেকারণে আমরা একে একে ১৪ ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে দিয়েছি।পরে আরও চিকিৎসকরা এসেও রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। আমাদের রোগীকে বাঁচাতে পারেননি তারা। এদিকে বিচার চেয়ে নিহতের মামা রাজু আহমেদ বলেন, চিকিৎসক রুমানা আরমান আমার ভাগনীর একটি নাড়ি কেটে ফেলেন। তার ভুল চিকিৎসায় আমার ভাগনীকে অকালে প্রাণ দিতে হলো। আমরা এর বিচার চাই। মৃত প্রসূতি নারীর বোন বলেন, রাত ৯টায় রোগী মারা গেছে কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে নানা অজুহাত দিয়ে ১৪ ব্যাগ রক্ত সংরক্ষণ করিয়েছে। রোগীর অবস্থা খারাপ মনে হলে আমাদের রোগীকে দিয়ে দেন, আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও ভালো হাসপাতালে নিয়ে যাবো।কিন্তু তারা আমাদের রোগীকে ছেড়ে দেয় নাই। ভুল চিকিৎসায় স্ত্রীর মৃত্যু দাবী করে মৃত প্রসূতির স্বামী নূরুল মল্লিক বলেন, আমি হাসপাতালের লোকজনকে বলেছি যা যা প্রয়োজন আমরা তাই দিবো। তবুও আমার রোগীকে বাঁচান। তারা আমার স্ত্রীর নাড় কেটে ফেলেছে, তারা আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
জামালপুর সিভিল সার্জন ফজলুর করিম মুঠোফোনে জানান, এ ঘটনায় ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন