নিজস্ব প্রতিবেদক \
মাদারগঞ্জে মামলার প্রধান আসামীকে নিয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ইউএনও ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ১২ অক্টোবর শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদারগঞ্জ উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ শুরু হয়েছে। চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।
জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন বাদী হয়ে ১৯৭৪ সনের ২৫/৩ ধারায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরনকে প্রধান আসামী করে ৫৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত করে আসামী করে। মামলা দায়েরের পর থেকে ১ অক্টোবর থেকে ২ অক্টোবর ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১২ জন সহ মোট ১৫ জন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। ইউএনও মাদারগঞ্জ জামালপুর ফেসবুক আইডি থেকে দেখা গেছে, জোড়খালী, আদারভিটা ও সিধুলী ইউনিয়নের পাল্লাবাড়ী মন্দির, পাল চৌধুরী মন্দির, মোধক বাড়ী মন্দির সহ কয়েকটি মন্দিরে নাশকতার মামলার আসামী নিয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করার ছবি গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ৮:৪০ মিনিটে পোস্ট করা হয়। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভুমি) সায়েদা খানম লিজা,অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর আলম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইবরাহিম খলিল, পল্লী বিদ্যুৎ এর ডিজিএম ওবায়দুল হক মাসুম, উপজেলা এলজিইডি প্রকোশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রহুল আমীন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক, উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা দীপা খাতুন সহ পুজা কমিটি এবং উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এক ছবিতে দেখা গেছে মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর আলমের পাশেই বসা এবং কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে ইউএনও ও আরো কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় কর্মকর্তার পাশেই দাড়ানো সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরন। উল্লেখ্য থাকে যে, ২০২৩ সালের ২৬ শে মার্চ রাত ৮ টায় মাদারগঞ্জ উপজেলার রায়গঞ্জ বাজারে পাকা রাস্তার ওপর রাম দা, লাঠি, ইট পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হওয়ার অবস্থায় এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য বিএনপির সমাবেশ পন্ড করার জন্য দোকান ভাংচুর, মোটর সাইকেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ২ সেপ্টেম্বর রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ'লীগের কয়েকজন নেতা জানান, মামলায় আমাদের নাম নেই তবুও আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ ১ নম্বর আসামীকে সাথে নিয়ে প্রশাসন ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন জানান, আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি। ইউএনও মহোদয় চেয়ারম্যানকে আগে থেকেই চিনে। তিনি তার গাড়ীতে তুলে বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শন করেছে। আমি মামলার আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানাই। এ বিষয়ে সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরন জানান, আমার বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়েছে আমি শুনেছি। মামলাটি মিথ্যা। কবে কোথায় কোন ঘটনা ঘটেছে তাও জানি না। চেয়ারম্যান হিসেবে পুজা মন্ডপ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এ দিকে কথা হলে মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহেনুর আলম এ প্রতিবেদককে জানান, আমি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমিও চিনি না তাকে তবে ইউএনও সাহেব তাকে চিনে জানে। এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত জানান, আমি এ বিষয়ে জানতাম না যে তিনি মামলার আসামী। আর আমাদের সাথে ওসি সাহেবও ছিলেন। এদিকে জামালপুর জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন