নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
জামালপুরে বুলবুল জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বুলবুলের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন স্ত্রী পারজানা খান জেরিন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে জামালপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিটি (জিডি) করা হয়।জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ বছর আগে জামালপুর পৌর শহরের পাথালিয়া পশ্চিমপাড়ার ওয়াহাব মাস্টারের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে পারজানা খান জেরিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বাবা-মা আমার সুখের কথা চিন্তা করে প্রায় ২০ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ১২ ভরি সোনা দিয়ে আমাকে সাজিয়ে দেন। বিয়ের পর বুলবুল বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ও মিষ্টি কথা বলে আমার সঞ্চিত টাকাসহ বাবা-মার কাছ থেকে প্রায় ৬৫ লাখ নিয়ে নেন। পরে শহরের মির্জা আজম চত্বরে বুলবুল জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলেন। এ সময় আমাদের ঘরে ৮ মাস আগে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। আমার স্বামী একজন নারী লোভী এবং বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়া করিয়া থাকে। বিষয়টি জেনে প্রতিবাদ করি। পরে স্বামী বুলবুল আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন এবং বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।স্ত্রী ফারজানা খান জেরিন জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) জামালপুর পৌর শহরের শেখের ভিটা এলাকার জনৈক আব্দুল জব্বারের আমার ভাড়া বাসা তালা দিয়ে সন্তানসহ টাঙ্গাইলের নাগুরপুর থানার বাবনাপাড়া গ্রামে আমার বাবার বাড়িতে আসি। বাসায় না থাকার সুযোগে আমার স্বামী বুলবুল গত বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তালা ভেঙে প্রায় ২০ লাখ টাকার আসবাবপত্র চুরি করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে জামালপুর পুলিশ সুপারের সহায়তা চাইলে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আমার স্বামী বুলবুলসহ ওইসব লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে মাইক্রোবাস যোগে জামালপুর আসলে স্বামী মো. আশরাফুল ইসলাম বুলবুল মোবাইল ফোনে আমাকে ও আমার চাচা জাকির হোসেন (৪০) ও আব্দুল মজিদকে (৩২) মিথ্যা মামলা দিবে এবং তাদের অথবা পরিবারের অন্য যেকোনো সদস্যকে খুন করে মরদেহ গুম করবে বলে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বুলবুল জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.আশরাফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার আগের ঘরের একটি সন্তান ছিল। সন্তানটিকে খুন করার জন্য গলার মধ্যে ভাজা কাঠি দিয়ে আঘাত করছিল। আঘাত করার পরে তাকে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল, ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় নিয়ে প্রায় ছয় মাস হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করেছি। এতে আমার প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার পুরো শরীরে আটটি অপারেশন হয়েছে। আগে আরও একটি মেয়েকে বিয়ে করছি, বৈধভাবে তালাক দিয়েছি।
এ নির্যাতন প্রসঙ্গে ফারজানা খানম জেরিন বলেন, ‘তার এটা একটা ছলনা। আমি তার আগের ঘরের মেয়েটাকে নিজের সন্তানের চেয়ে বেশি আদর করতাম। ওই মেয়ে কাটা চামচ হাতে নিয়ে ফ্রিজ থেকে জুস বের করতে গিয়ে পা পিছলে গিয়ে গলায় আঘাত পায়। আমি তার হাসপাতালে গিয়ে এক নারী ডাক্তারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় আমাকে মারধর করে। যা সেই দিনের সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া যাবে। এরপর থেকে সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তার দাবি, একের পর এক মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ের পর মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তালাক দিয়ে দেয়। আমার কাছ থেকেও ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে বুলবুল জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম বুলবুলের একাধিক বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে, এ বিষয়ে রিপোর্ট না করার জন্য বারবার সাংবাদিকদের অুনরোধ করেন তিনি ।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ্ নেওয়াজ বলেন, ‘জিডি হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন