নান্দিনা প্রতিনিধি ।।
ফল খাওয়ার আশায় শখের বসে অনেকেই বাড়ীর আঙিনায় নারকেল গাছ, পেয়ারা, আম, কাঁঠাল, পেঁপের গাছ রোপন করে থাকেন। কিন্তু কাঠবিড়ালী নামক প্রাণীটি এসব ফল গাছেই খেয়ে নষ্ট করে ফেলছে। জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনাসহ সমগ্র এলাকায় কাঠবিড়ালীর অত্যাচার আগের চেয়ে দ্বিগুন হয়েছে।
গ্রামের লোকজন শরীরের পুষ্টির চাহিদার কথা মাথায় রেখে আম, কাঁঠাল, নারকেল, পেঁপে, পেয়ারার গাছ লাগিয়ে থাকেন। অনেকেই বাণিজ্যিকভাবেই এসব ফলের আবাদ করে থাকেন। কিন্তু গাছে ফল আধাপাকা অবস্থায় কাঠবিড়ালীর দল হুমড়ি খেয়ে পড়ে। একের পর এক ফল খেয়ে সাবাড় করছে কাঠবিড়ালী।
গ্রামের মানুষের তিল তিল করে গড়ে তোলা কষ্টার্জিত এসব ফল ও ফলজ সম্পদ নিজেরা পারে না পুরোপুরি ভোগ করতে । নিজের গাছের ফল ফলাদি খেয়ে পুষ্টির চাহিদা মিটানোর স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিচ্ছে ক্ষতিকর এ ক্ষুদ্র কাঠবিড়ালী। এতে আর্থিক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন গ্রামের মানুষ।
জানা গেছে, আগের তুলনায় জামালপুর সদরে ঘনবসতি ও গাছগাছালির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গত দুইতিন দশক থেকেই শুরু হয়েছে কাঠবিড়ালীর উৎপাত।
বর্তমানে এদের উপদ্রপ আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে গেছে। কাঠবিড়ালী ফলজ সম্পদের ওপর ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালাচ্ছে রাত দিন সমানে।নিজের চোখের সামনে কাঠবিড়ালীর মজাদার সব ফলজ খেয়ে নষ্ট করে ফেললেও প্রতিরোধের তেমন কোনো উপায় জানা নেই। অপূরণীয় ক্ষতিতে ক্ষণিকের জন্যে হৈচৈ করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না ভুক্তভোগীদের।
কাঠবিড়ালির হাত থেকে ফলন রক্ষা করতে অনেকেই শব্দ বা ঘণ্টা বাজানোর মতো ফাঁদ ব্যবহার করছেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ দিচ্ছেনা।
নান্দিনা এলাকার মোশারফর হোসেন বলেন, একসময় এ প্রাণীটি মানুষের আনাগোনা ভয় পেতো, ফলন খেয়ে ফেলতো দিনের বেলায়, এখন রাতদিন সমানে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
আগে বড়বড় ফল গাছ, যেমন একগাছ থেকে আরেক গাছে লাফিয়ে লাফিয়ে চলাচল করতো। এখন এরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেছে। ছোট ছোট ফলজ গাছ ও ফাঁকা জায়গায় এমনকি মাটিতেও বিচরণ করে ঘরের আঙ্গিনার শখের লাগানো প্রিয় ফলজ গাছের উপরও মুহুর্তেই আক্রমণ করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না বোপরোয়া হয়ে ওঠা কাঠবিড়ালী।
নান্দিনা এলাকার ব্যবসায়ী নোমান জানান, কাঠবিড়ালী অন্যান্য গাছের ফলের পাশাপাশি গাছের ডাব খেয়ে সাবাড় করছে। নারকেল গাছের কচি অবস্থায় ডাবে মুখ লাগিয়ে গর্ত করে সমস্ত পানি খেয়ে ফেলছে। এতে এলাকায় ডাবের সংকট দেখা দিয়েছে। আর বাজারে ডাবের দামও বেড়ে গেছে।
এলাকার লোকজন বলেন, কাঠবিড়ালীর কারণে গাছ থেকে ডাব সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে হাট বাজারে একটি ডাব ৮০ টাকা থেকে শুরু করে একশ’ টাকায় ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে।
কাঠবিড়ালী প্রতিরোধ করা গেলে ডাব সহ ফলজ সম্পদক রক্ষা পেতো। বিষয়টি জরুরি কৃষি বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
সরকারি মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত জামালপুরের প্রচারশীর্ষ দৈনিক-সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন অনলাইন ভার্সন । আপনার মতামত প্রকাশ করুন